কোরআনে পিতা-মাতার প্রতি সম্মান ও ভালোবাসার কথা বলা হয়েছে।
পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না।
- "আর আমি নির্দেশ দিয়েছি মানুষকে, তার পিতা-মাতার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার।" (সুরা-৪৬ আহকাফ, আয়াত: ১৫)
- "আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার প্রতি দয়া ও করুণা করার নির্দেশ দিয়েছি।" (সুরা-২৯ আনকাবুত, আয়াত: ৮)
পিতা-মাতার
প্রতি ভালোবাসা,
শ্রদ্ধা ও
আদর-যত্ন
করা ইসলামের
শিক্ষা।
সূরাঃ আল-ইসরা (বনী-ইসরাঈল) | Al-Isra | আয়াতঃ ২৩ -২৪
(২৩)
তোমার প্রতিপালক
নির্দেশ দিয়েছেন
যে, তোমরা
তিনি ছাড়া
অন্য কারো
উপাসনা করবে
না এবং
পিতা-মাতার
প্রতি সদ্ব্যবহার
করবে; তাদের
এক জন
অথবা উভয়েই
তোমার জীবদ্দশায়
বার্ধক্যে উপনীত
হলে তাদেরকে
(বিরক্তিসূচক শব্দ)
‘উঃ’ বলো
না এবং
তাদেরকে ভৎর্সনা
করো না;
বরং তাদের
সাথে বলো
সম্মানসূচক নম্র
কথা। [1]
[1] এই আয়াতে মহান আল্লাহ তাঁর ইবাদতের পর দ্বিতীয় নম্বরে পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ থেকে পিতা-মাতার আনুগত্য ও তাঁদের খেদমত করার এবং তাঁদের প্রতি আদব ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করার কত যে গুরুত্ব তা পরিষ্কার হয়ে যায়।
অর্থাৎ, প্রতিপালকের প্রতিপালকত্বের দাবীসমূহের সাথে সাথে পিতা-মাতার দাবীসমূহ পূরণ করাও অত্যাবশ্যক। হাদীসসমূহেও এর গুরুত্ব এবং এর প্রতি চরম তাকীদ করা হয়েছে। বিশেষ করে বার্ধক্যে তাঁদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলতে এবং তাঁদেরকে ধমক দিতে নিষেধ করেছেন।
কেননা, বার্ধক্যে তাঁরা দুর্বল ও অসহায় হয়ে যান। পক্ষান্তরে সন্তানরা হয় সবল এবং উপার্জন-সক্ষম ও (সংসারের সব কিছুর) ব্যবস্থাপক।
এ ছাড়া যৌবনের উন্মাদনাময় উদ্যম এবং বার্ধক্যের ভুক্তপূর্ব স্নিগ্ধ ও উষ্ণ অভিজ্ঞতার মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এই সব অবস্থায় পিতা-মাতার প্রতি আদব ও শ্রদ্ধার দাবীসমূহের খেয়াল রাখার মুহূর্তটা হয় অতীব কঠিন।
তাই
আল্লাহর কাছে
সন্তোষভাজন সেই-ই
হবে, যে
তাঁদের শ্রদ্ধার
দাবী পূরণ
ও প্রাপ্য
অধিকার আদায়ের
ব্যাপারে যত্নবান
হবে।
(২৪)
অনুকম্পায় তাদের
প্রতি বিনয়াবনত
থেকো[1] এবং
বলো, ‘হে
আমার প্রতিপালক!
তাদের উভয়ের
প্রতি দয়া
কর; যেভাবে
শৈশবে তারা
আমাকে প্রতিপালন
করেছে।’
[1] পাখী যখন তার বাচ্চাদেরকে নিজ করুণার ছায়ায় রাখতে চায়, তখন তাদের জন্য নিজের ডানাকে নত করে দেয়।
অর্থাৎ, তুমিও পিতা-মাতার সাথে ঐরূপ উত্তম এবং করুণাসিক্ত আচরণ কর। আর তাঁদের ঐরূপ সেবাযত্ন কর, যেরূপ তাঁরা তোমার সেবাযত্ন করেছিলেন; যখন তুমি শিশু ছিলে।
অথবা এর অর্থ হল, পাখী যখন উড়ার এবং ঊর্ধ্বে যাওয়ার ইচ্ছা করে, তখন তার ডানা দু’টিকে প্রসারিত করে দেয়।
আর
যখন নীচে
অবতরণ করার
ইচ্ছা করে,
তখন ডানা
দু’টি
গুটিয়ে নেয়।
এই দিক
দিয়ে বাজু
বিছিয়ে দেওয়ার
অর্থ হবে,
পিতা-মাতার
সামনে নম্র
ও বিনয়ী
হয়ে যাও।
0 Comments